ফাস্ট ফুট বা জাঙ্ক ফুট খাবারের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জেনে নিন
ফাস্ট ফুট বা জাঙ্ক ফুট খাবার
ফাস্ট ফুট বা জাঙ্ক ফুট হচ্ছে এমন এক ধরনের খাবার, যা স্বাস্থ্যগত উপাদানের পরিবর্তে মুখোরোচক স্বাদের জন্য উৎপাদন করা হয়। এগুলো খেতে খুব সুস্বাদু মনে হতে পারে, কিন্তু বেশির ভাগ সময়েই এই খাবার শরীরের জন্য ভালো নয়। সুস্বাদু করার জন্য এত প্রায়শই অতিরিক্ত রাসায়নিক পদার্থ থাকে যেগুলো অস্বাস্থ্যকর। ফাস্টফুডে সাধারণত প্রচুর পরিমাণে প্রণিজ চর্বি ও চিনি থাকে।
ফাস্ট ফুট বা জাঙ্ক ফুট খাবার কোন গুলো
বার্গার, ফ্রায়েড চিকেন, পিৎজা, চিপস, মচমচে ভাজা খাবার,কেক কিংবা বিস্কুট, সফ্ট ড্রিংক, কোকা কোলা ,লেমনরে মতো গ্যাসীয় পানি ইত্যাদি ।
এসব খাদ্য প্রচুর পরিমাণে প্রাণিজ চর্বি ও চিনি থাকে। গ্যাসীয় পানিতে অতিরিক্ত চিনি ও কৃত্রিম রং মিশ্রিত থাকে যা আমাদের স্বাস্থ্যর জন্য খুবই ক্ষতিকর।
ফাস্টফুড বা জাঙ্ক ফুট খাবারের ক্ষতিকর দিক
--- আমরা যখন অধিক পরিমাণে চর্বিজাতীয় খাবার খাই, তখন আমাদের দেহ এগুলোকে চর্বিকলায় রপান্তরিত করে এবং অধিক পরিমাণে চিনি আমাদের দাঁত ও ত্বককে নষ্ট করে দিতে পারে। ফাস্ট ফুড কখনো সুষম খাদ্যের মধ্যে পড়ে না। ফাস্ট ফুডে আমাদের জন্য দরকারি ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের অভাব রয়েছে। ফাস্ট ফুড পাওয়ার কারণে উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েদের দেত স্থূলকায় হয়ে পড়ে । প্যাকেট বা কৌটাজাত খাবারের চেয়ে প্রাকৃতিক সজীব খাবার স্বাস্থের জন্য অনেক ভালো। তাই যতটুকু সম্ভব ফাস্ট ফুড বা জাঙ্ক খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত ।
--- ফাস্ট ফুড বা জাঙ্ক ফুট খাবার খেলে কোন না কোন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
কারণ এই খাবার গুলো সাধারণত ফুটফাত বা রাস্তার ধারে বেশি বিক্রি হয় । ফলে খাবারগুলো মশা ,মাছি বসতে দেখা যায় যা জীবানুর সংক্রমণ হওয়ার ঝুকি থাকে ।
এছাড়া এ খাবার গুলো অনেক হোটেল বা দোকানে বহুসময় ধরে সংরক্ষণ করে রেখে বিক্রি করে যা খেলে আমাদের পেটে অসুখ দেখা দেয়।
--- ফাস্ট ফুড বা জাঙ্ক ফুড খাবারের অন্যতম একটি খারাপ দিক হল দেহের ওজন বেড়ে যাওয়া। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিগত দশ বছরে স্থূলকতায় মৃত্যুহার দশ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রধান কারণ হল ফাস্ট ফুড বা জাঙ্ক ফুড জাতীয় খাবার গ্রহণ।
এর পাশাপাশি বৃদ্ধি পেয়েছে উচ্চ রক্তচাপ কিংবা ডায়াবেটিসের মতো অনেক সমস্যা। প্রতিনিয়ত জাঙ্কফুড গ্রহণে স্থূলকায় মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ফাস্ট ফুড খাওয়ার জন্যই সারাবিশ্বে মোটা হওয়ার প্রবণতা অনেক বেড়ে গিয়েছে। এসব খেলে রক্তে চিনির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। প্রতিনিয়ত চিনির মাত্রা ওঠানামা করার কারণে অগ্নাশয়ের কার্যকারিতা হ্রাস পায় এবং ধীরে ধীরে ইনসুলিনের নিঃসরণের পরিমাণও হ্রাস পেতে থাকে। ফলাফল হিসাবে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হৃদরোগ, বেদনাদায়ক স্নায়ুজনিত ক্ষতি, কিডনির ক্ষতি, আলঝেইমারের ঝুঁকি বেড়ে যায় ।ফাস্ট ফুডে পরিমানের অধিক শর্করা এবং চর্বি থাকায় তা শরীরে নানান সমস্যা তৈরি করে, বিশেষ করে মেদ বাড়িয়ে দেয়। অতিরিক্ত চর্বি দেহে জমতে থাকে। ওজন বেড়ে যাওয়ার ফলে শরীর তার স্বাভাবিকতা হারিয়ে ফেলে।
এর ফলে মৃত্যর ঝুকি বেশি থাকে ।
--- ফাস্ট ফুট খাবার একজন মানুষের মস্তিষ্ক বিকাশে ও পড়ালেখায় ও ক্ষতিকর প্রভাব পেলে। ফাস্ট ফুট বা জাঙ্ক ফুট খাবারে আয়রনের পরিমান কম থাকে যা মস্তিষ্কের বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে।এছাড়া ফাস্ট ফুট বা জাঙ্ক ফুট খাবারে ছাড়া ফাস্ট ফুডে প্রচুর পরিমানে ফ্যাট এবং শর্করা থাকে। যা পড়াশোনা, কোনও কিছু শেখা বা বোঝার ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব।
তাই আমাদের এখন থেকে ফাস্ট ফুট বা জাঙ্ক ফুট জাতীয় খাদ্য ত্যাগ করার অভ্যাস গড়ে তোলা। সুষম খাদ্য, শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলা উচিত।
এতে করে অনেক ভয়াবহ রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে
0 মন্তব্যসমূহ