স্বাস্থ্যকর ডায়েট চার্টের ৬ টি সঠিক টিপস জেনে নিন


স্বাস্থ্যকর ডায়েট চার্টের ৬ টি সঠিক টিপস জেনে নিন  

স্বাস্থ্যকর ডায়েট এর মূল চাবিকাঠি হলো আপনি কতটা সক্রিয় রয়েছেন আপনার স্বাস্থ্যের প্রতি, অর্থ্যাৎ আপনি প্রতিদিন যে পরিমাণ ক্যালোরি খাবার থেকে গ্রহণ করেন সে পরিমাণ ক্যালোরি যদি খরচ করতে না পারেন তাহলে সেটা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের দিনে প্রায় ২৫০০ ক্যালোরি ( অর্থাৎ ১০,৪৬০ কিলোজুল ) এবং একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর ২০০০ ক্যালোরি ( অর্থাৎ ৮,৩৬৮ কিলোজুল ) পরিমাণ ক্যালোরি শরীরে থাকা অবশ্যক। 

 প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত খাওয়ার পর  শরীরে যে পরিমাণ ক্যালোরি হয় যথাসময়ে যদি তা খরচ করতে না পারে তাহলে তা শরীরে ফ্যাট আকারে সঞ্চিত হতে থাকে। ফলে শরীরের ওজন বাড়তে থাকে। আর  প্রয়োজনের তুলনায় যদি খাবার কম খাওয়া হয় তাহলে এর উল্টোটা ঘটে অর্থাৎ শরীরের ওজন হ্রাস পেতে থাকে। 


অনেকে স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর ডায়েট অনুসরণ করতে চায়। কিন্তু না জেনে অনেকই ভুল ভাবে ডায়েট চার্ট করে থাকে। একটু জেনে বুঝে অনুসরণ করলে অনেক সুন্দর ভাবে স্বাস্থ্য রক্ষা করা যায়। তাই আজকে আপনাদের জন্য স্বাস্থ্যকর ডায়েট চার্টের ৬ টি সঠিক টিপস নিয়ে এলাম।(Low Calorie Takeaway)


১) খাবারে ফাইবার ও স্টার্চি কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ রাখুন সঠিক ভাবে


স্টার্চি কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবারের পরিমাণ খাবারের এক-তৃতীয়াংশ হওয়া উচিত। আলু, রুটি, চাল, এবং পাস্তায়  পর্যাপ্ত পরিমাণে স্টার্চি কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়। উচ্চতর ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গুলোর মধ্যে আখরোটের পাস্তা, বাদামী চাল এবং আলু অন্যতম।

প্রতিটি প্রধান খাবারের সাথে কমপক্ষে একটি স্টার্চি খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন। অনেকে মনে করে স্টার্চি খাবার ফ্যাট বাড়ায় আসলে তা সঠিক নয়। স্টার্চি খাবারে যে পরিমাণ শর্করা আছে তা কম ক্যালরিসমৃদ্ধ। (Junk food healthy food)


২) ফলের সাথে শাকসবজি খাওয়াতে অব্যস্থ হন 


বাহিরের লোভনীয় খাবারের প্রতি সবারই অন্যরকম ঝোঁক থাকে। যতই চেষ্টা করা হোক না কেন বাহিরের খাবার সবারই কম বেশি খাওয়া হয়। এতে করে ফল ও শাকসবজি খাওয়ার হার অনেকখানি কমে যায়। অনেকে ফল ও সবজি অপছন্দ করে বিদায় খাবার তালিকা থেকে এগুলোকে বাদ দিয়ে দেয়। 

নিয়মিত যদি ফলমূল ও শাকসবজি  খাওয়ার রুটিনে না রাখা হয় তাহলে  হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও ক্যান্সারের মত মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। আমাদের নিত্যদিনের শারীরিক সুস্থতার সিংহভাগ পাওয়া যায় এই দুটি উৎস থেকে। তাই ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়ার প্রতি কোন রকম অনীহা থাকা চলবে না।  (healthy and unhealthy food list)


৩) খাবার তালিকায় রাখুন সামুদ্রিক মাছ



সামুদ্রিক মাছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন এ ও ডি থাকে যা একাধিক জটিল রোগ নিরাময় ভূমিকা রাখে। সামুদ্রিক মাছের মধ্যে বহু উপকারিতা ও পুষ্টিগুণে ভরপুর. এটি আপনার হৃদরোগ প্রতিরোধ করে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। মস্তিষ্কের কর্ম দক্ষতা বৃদ্ধিতে সামুদ্রিক মাছ একটি উৎকৃষ্ট খাবার। 

এছাড়াও সামুদ্রিক মাছ দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিতে ও বাতের ব্যাথা সহ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। স্যালমন, ট্রাউট, হারিং, সার্ডাইনস, পাইলচার্ডস, ম্যাকেরেল, হ্যাডক, প্লেস, কোলি, কড, টুনা, স্কেট, হ্যাক সামুদ্রিক মাছের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় সামুদ্রিক খাবার।(unhealthy foods for kids)


৪) খাবারে লবণ ও চিনি নিয়ে থাকুন সচেতন 



অতিরিক্ত চিনির অপকারিতা আমাদের কমবেশি সবারই জানা আছে। দাঁতের মাড়ি নষ্ট, বাড়তি ক্যালোরি কারণে ওজন বৃদ্ধি, উচ্চতর ব্লাড প্রেসার এগুলোর জন্য দায়ী একমাত্র অতিরিক্ত চিনি খাওয়া। চিনি লেপটিন প্রতিরোধ করে। আর লেপটিন আমাদের খিদে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই বেশি চিনি খেলে খিদে বাড়তেই থাকে। এছাড়াও এটি ইনসুলিন হরমোনের কার্যকারিতা নষ্ট করে ফেলে। মাত্রাতিরিক্ত চিনি খেলে লিভারের কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে ক্ষয়রোগ থেকে হাই ব্লাড প্রেসার এর জন্য দায়ী অতিরিক্ত লবণ। শরীরে লবণের পরিমাণ বেশি হলে অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এছাড়াও অতিরিক্ত লবণ হাড়ের ক্যালসিয়াম ক্ষয় করে ফেলে। আর এতে অস্টিওপরোসিস রোগ হয়। মস্তিষ্কের নিউরন কে প্রভাবিত করে অতিরিক্ত কাঁচা লবণ। পাকস্থলীর ঘা ও কোলন ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগের অন্যতম কারণ অতিরিক্ত লবণ।(low calorie dunkin drinks)


৫) পানি পানে অবহেলা নয়


ডিহাইড্রেট থেকে বাঁচাত প্রচুর পরিমাণে তরল পানি পান করুন। গবেষকরা প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ গ্লাস পানি পান করার পরামর্শ দিয়ে থাকে।  এলকোহল মুক্ত সমস্ত পানীয়, কম চর্বিযুক্ত দুধ এবং চিনিমুক্ত চা ও কফি পানীয় স্বাস্থ্যকর একটি পছন্দ হতে পারে। মানব দেহের কোষে অক্সিজেন পৌঁছানোর বাহক হচ্ছে পানি। 

এছাড়াও পানি বিপাকক্রিয়া, শ্বাস-প্রশ্বাস ও দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। দেহের বর্জ্য নিষ্কাশন ও কিডনির ভারসাম্য রক্ষাতেও পানির ভূমিকা ব্যাপক। নিয়মিত পানি পান আথ্রাইটিস, অস্টিওপোরোসিস, হূদরোগ ক্যান্সার, পানিশূন্যতা ও কিডনিতে পাথর প্রতিরোধে সাহায্য করে(low calorie dunkin donuts drinks)



৬) সকালের নাস্তা এড়িয়ে যাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভাল লক্ষন নয়


কিছু লোক সকালের নাস্তায় এড়িয়ে যান কারণ তারা মনে করে এটি তাদের ওজন হ্রাস করতে সহায়তা করবে। ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যায় "সকালের নাস্তা না খেয়েই যে শরীরের ওজন স্বাস্থ্যসম্মত পর্যায়ে রাখা যাবে তার নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ নেই"। সকালের নাস্তা হতে পারে ক্যালসিয়াম ও আঁশ জাতীয় খাবারের ভাল উৎস। বিশেষ করে শিশুদের জন্য তা খুবই উপকারী। গবেষণায় দেখা যায় শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি শোষণের জন্য সকালের নাস্তা বেশ উপকারী।এটি আপনার সারাদিনের কাজের জন্য শরীরকে প্রস্তুত করে তোলে। সকালের নাস্তা এড়িয়ে যাওয়াটা মোটেও সমীচীন নয়। এতে শরীরের ওপর প্রভাব পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন গবেষকরা। (low calorie drinks at dunkin)


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ