ডায়াবেটিস চিকিৎসায় মেথি খুবই উপকারী।
ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত মেথির বীজ খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা সুষম থাকে। প্রতিদিন প্রায় 20 গ্রাম করে মেথি খেলে রক্তে চিনির পরিমাণ হ্রাস পায়।মেথির বীজ মসুর ডাল হিসাবে খাওয়া যায়। ডায়াবেটিস রোগীরা যদি মেথি পিষে সকাল বিকাল এবং সন্ধ্যা পানিতে মিশিয়ে নিয়মিত পান করে তাহলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন মেথির ব্যবহারে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।
রোজ মেথি ব্যবহারের ফলে আপনার নানাবিধ শারীরিক সমস্যা সমাধান হবে। যেমনঃ
হরমোনজনিত ব্যধিতে মেথি
এক কাপ পানিতে এক চামচ মেথির বীজ মিশিয়ে নিয়মিত খেলে হরমোনজনিত অসুবিধা গুলো থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং উদ্বেগের চিকিৎসার জন্য প্রতিদিন মেথির বীজ, লেবুর রস, মধু এবং কয়েকটি তুলসী পাতা এবং এক টুকরো দারুচিনি সিদ্ধ করে ঠান্ডা পানিতে মিশিয়ে পান করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
মাসিকের নানাবিধ সমস্যা সমাধানে
১ গ্লাস হালকা গরম পানিতে এক চিমটি মেথির বীজ নিয়মিত পানে ঋতুস্রাব এর ক্ষেত্রে অনেক উপকার পাওয়া যায়।এই পদ্ধতিটি যদি বিশেষ দিনে দু তিন দিন আগ থেকে অনুসরণ করা হয় তবে পিরিয়ডের কারণে অন্যান্য সমস্যাগুলো এড়ানো যায়।
ত্বকের কালো দাগ দূর করতে মেথি
২ কাপ পানিতে তিন চামচ মেথির বীজ সিদ্ধ করুন এবার এগুলা কে পিষে এর একটি পেস্ট তৈরি করুন এবং পেস্টটি আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে রাখুন এরপর শুকিয়ে গেলে তা ধুয়ে ফেলুন। এভাবে কয়েকদিন ব্যবহারে ভালো পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। এছাড়াও যদি চুল পড়ার সমস্যা থাকে তাহলে উক্ত পেস্ট নিয়মিত ব্যবহারে আপনার চুল পড়া বন্ধ হয়ে যাবে। এইজন্য আপনাকে এটি চুলের গোড়ায় লাগাতে হবে এবং না শুকানো পর্যন্ত রেখে দিতে হবে। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি চুলকে শক্তিশালী এবং ঘন করে তোলে। এছাড়াও মেথি চুলের খুশকি দূর করে।
নতুন মায়েদের ক্ষেত্রে মেথির ব্যবহার
মেথির বীজ স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য খুবই উপকারী এছাড়াও প্রসবের পরের দুর্বলতায় মেথির বীজের ব্যবহার অনেক কার্যকরী একটি উপাদান। এটি হাড়কে মজবুত করে। জরায়ুর সংকোচন-প্রসারণের যন্ত্রণা কমাতে মেথির অবদান অনেক।
সর্দি এবং ফ্লুর জন্য মেথি
সর্দি, বুকে ব্যথা এবং শ্লেষ্মা গঠনে মেথির ব্যবহার একটি উৎকৃষ্ট পদ্ধতি। সকাল ও সন্ধ্যায় এক কাপ পানিতে দুই চা-চামচ মেথি নিয়ে সিদ্ধ করে তার সাথে মধু মিশিয়ে পান করুন। নিয়মিত ব্যবহারের পুরানো পুরানো সর্দি দূর হয়। সুগন্ধ যে মজাদার যে খাবারগুলোতে ব্যবহার করা হয় সেগুলো কেবল সুস্বাদু নয় স্বাস্থ্যকরও বটে। আমাদের দেশে মেথির শাক সবজি খাওয়া হয়। সাধারণ মেথির চেয়ে কাসুরি মেথি বেশি সুগন্ধযুক্ত। বিশেষজ্ঞদের মতে প্রকৃতিতে যে মেথি রয়েছে প্রোটিন ফসফরাস এছাড়াও একটি জৈব ধরনের স্টিল রয়েছে যা পেট ব্যাথা দূর করে। মেথি তাৎক্ষণিকভাবে তা শোষণ করে এবং শরীর থেকে রক্ত স্বল্পতা দূর করে।
মেথিতে বিভিন্ন ধরনের ক্ষারক রয়েছে এর মধ্যে একটি হল ট্রাই গোণে লাইন। আমেরিকার এক গবেষকের মতে, মেথির বীজ ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের জন্য খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। এছাড়াও অন্ত্রের জ্বালাপোড়া, গ্যাস্ট্রিক, আলসারের জন্য উপকারী। এমনকি মেথির বীজে উপকারী এমন অনেক উপাদান থাকে যা শরীরের জন্য উপকারী।এটি রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে ও ত্বকের রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা তাদের খাবারে মেথির বীজ রাখলে করে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
মেথি বার্লি
মেথি বার্লি গলা এবং গলার ব্যথা দূর করার জন্য খুবই উপকারী। এটি পান করার ফলে শ্বাসকষ্ট কমে যায়। এটি কাশির তীব্রতায় কার্যকর। কোষ্ঠকাঠিন্য পেটের কৃমি মারতে সাহায্য করে। হজমের উন্নতি করে এবং যাদের ফ্লেমটিক মেজাজ রয়েছে তাদের পক্ষে মেথি নিয়মিত ব্যবহারের ভালো উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্যের ক্ষেত্রে গুড়ের সাথে মেথির বীজ মিশিয়ে খেলে অন্ত্রের জন্য অনেক ভাল। মেথি লিভার কে শক্তিশালী করে।
মুখের ব্রণ দূর করতে মেথির ব্যবহার
৪ চামচ মেথির বীজ ৪ কাপ পানির সাথে মিশিয়ে রাতে রেখে দিন। সকালে উক্ত পানি ফিল্টার করে ১৫ মিনিট সিদ্ধ করুন। তারপর ঠাণ্ডা হলে ব্রণ এর মধ্যে এটি লাগিয়ে নিন। এভাবে কয়েক দিন ব্যবহার করুন। এছাড়াও মেথির বীজ পিষে ব্রনের উপর মাসাজ করতে পারেন।
0 মন্তব্যসমূহ