ভাবতেও পারবেন না বেকিং সোডার কত প্রকারের ব্যবহার রয়েছে।

ভাবতেও পারবেন না বেকিং সোডার কত প্রকারের ব্যবহার রয়েছে।

বেকিং সোডা যাকে আমরা বাই কার্বনেট বলে থাকি। প্রত্যেক পরিবারে বেকিং সোডা একটি পরিচিত শব্দ। বেকিং সোডা বহুমুখী ও গৃহস্থালি সামগ্রী কাজে ব্যবহৃত একটি উৎকৃষ্ট উপাদান। তবে আপনি কি জানেন বেকিং সোডা রান্না কাজে ব্যবহার ছাড়াও আরো অনেক কিছুতে ব্যবহার করা যায়? তাহলে আজ জেনে নেই কি কি কাজে বেকিং সোডার ব্যবহার রয়েছে। 

দাগ পরিষ্কার 


সাধারণত আমরা মেঝেতে যে কার্পেট ব্যবহার করি সেগুলো কিছুদিন পরপর ময়লা হয়ে যায়। আর এতে যে ধরনের দাগ পড়ে তা পরিষ্কার করা এক রকম কষ্ট সাধ্য। কিন্তু আপনি চাইলে এতে সামান্য কিছু বেকিং সোডা গরম পানির মিশ্রণ যোগ করে দিতে পারেন। এভাবে পরপর প্রয়োগে কিছুদিন রেখে দিন। দেখবেন কার্পেটের গায়ে লেগে থাকা দাগ গায়েব হয়ে গিয়েছে। 



মাউথওয়াশ


মুখে দুর্গন্ধ হওয়া এর থেকে অস্বাস্থ্যকর এবং অস্বস্তিকর কোনটাই হতে পারে না। আমরা যখন ব্রাশ করি মুখের অনেক অংশে ব্রাশ পৌছাতে পারেনা। ফলে উক্ত জায়গায় বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া জমা হয়ে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে। আপনি চাইলে বেকিং সোডার মাধ্যমে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। কারণ বেকিং সোডা তে রয়েছে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল। আধা চা চামচ বেকিং সোডার সাথে একটু গরম পানি মিশিয়ে নিয়মিত কুলি করুন। কয়েকদিনের মধ্যে ভালো ফলাফল পাবেন।


বাতাস বিশুদ্ধকরন 


আমাদের ব্যবহৃত এয়ার ফ্রেশনার গুলো সাধারণত খারাপ গন্ধ গুলো এড়িয়ে ভালো বাতাস পরিবেশন করে। এর ফলে ভালো বাতাসের সাথে খারাপ বাতাসের সংমিশ্রণে একটা অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এরকম পরিস্থিতিতে পড়লে আপনি চাইলে বেকিং সোডার স্প্রে করে নিতে পারেন। এর ফলে আপনি এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।



জামা কাপড় পরিষ্কার এবং উজ্জ্বল 


বেকিং সোডা শুধু জামা কাপড়ই পরিষ্কার করে না এটি জামাকাপড় উজ্জ্বল করতেও সহযোগিতা করে। জামা কাপড় পরিষ্কার করার সময় ডিটারজেন্ট সাথে এক কাপ বেকিং সোডা মিশিয়ে দিন। বেকিং সোডা একটি ক্ষার আর এটি দাগ এর মধ্যে উপস্থিত এসিডগুলো খুব তাড়াতাড়ি দূর করে। 


বাথরুম ক্লিনার


বাথরুমের সাধারণত হলদে ভাব এর কিছু দাগ পড়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে এমন কিছু দাগ পড়ে যা পরিষ্কার করা দুঃসাধ্য। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ডিটারজেন্ট ক্লিনার অনেক সময় দাগ গুলো দূর করতে পারে না। এইজন্য বেকিং সোডা একটি উৎকৃষ্ট উপাদান। দাগ পড়ার স্থানে বেকিং সোডা ছিটিয়ে 20 মিনিট পর্যন্ত রেখে দিন। বেকিং সোডা মেজে কে চকচকে পরিষ্কার করার সাথে আপনার বাথরুম কে জীবাণুমুক্তও করে।



স্পা চিকিৎসায়


দীর্ঘক্ষণ কাজ করার ফলে অনেক দুর্বল হয়ে পড়েছেন? তাহলে গরম পানির সাথে হালকা একটু বেকিং সোডা মিশিয়ে বাথটাবে স্পা তৈরি করুন। এ পদ্ধতিটি আপনার মস্তিষ্কে প্রশান্তি এনে দিবে।



টুথব্রাশ পরিষ্কার


ঠান্ডা এবং ফ্লুতে আমাদের ব্রাশে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া জমে থাকে। আর এটি যখন পানির সংস্পর্শ পায় তখন ব্যাকটেরিয়াগুলো আরো সক্রিয় হয়ে উঠে। এক কাপ পানিতে পরিমাণমতো বেকিং সোডা মিশিয়ে আধা ঘন্টা ব্রাশটি তাতে রেখে দিন। এতে সমস্যাটি সমাধান হবে।


জুতা পরিষ্কার


দুর্গন্ধযুক্ত জুতা নিয়ে কে না বিব্রত হয়! কিন্তু তা যদি কোন অন্য মানুষের সামনে হয় তাহলে ব্যাপারটা অনেক অস্বস্তিকর হয়। এর থেকে মুক্তি পেতে পারেন খুব সহজেই। এরজন্য ২ টেবিল চামচ বেকিং সোডা একটি কাপড়ে মিশিয়ে তাতে পানি যুক্ত করে জুতার ভেতরে রেখে দিন। 


ত্বকের ব্যাথা দূর করতে


সাধারণত ত্বকে বেকিং সোডা লাগানো নিরাপদ নয়। তবে কোন প্রকার পোকার কামড় থেকে যদি লাল ভাব দেখা দেয় এবং এতে চুলকানি হয় তবে এক্ষেত্রে বেকিং সোডা খুবই কার্যকর একটি পদ্ধতি। সামান্য পানিতে বেকিং সোডা মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এরপর সে পেস্টটি আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে নিন।



আবর্জনা পরিস্কার


ধরুন আপনি কোন জায়গায় আবর্জনা ফেলে রাখলেন এবং তা পঁচে ভয়াবহ দুর্গন্ধ বের হতে লাগলো। এই ক্ষেত্রে এটি পরিষ্কার করা ছাড়া বিকল্প কিছুই নেই। আর এর জন্য বেকিং সোডা খুবই কার্যকরী একটি সমাধান। পরিমাণ মতো বেকিং সোডার সাথে ভিনেগার এবং পানি মিশিয়ে আবর্জনার স্থানেও ঢেলে দিন। এতে উক্ত সমস্যাটি থেকে মুক্তি পেতে পারেন।


আন্ডার আমস এর দুর্গন্ধ দূর করতে 


গরমের সময় সাধারণত বেশির ভাগ আন্ডার আর্রমসের সমস্যাগুলিতে পড়তে হয়। উক্ত জায়গায় দুর্গন্ধ হওয়ার সাথে কালো দাগ পড়ে যায়। এক্ষেত্রে পানির সাথে সামান্য বেকিং সোডার একটি মিশ্রণ তৈরি করুন এবং এটি এক মিনিটের জন্য উক্ত স্থানে মাসাজ করুন। এভাবে 30 মিনিট রেখে দিয়ে হালকা গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার করলে সবচেয়ে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে


এছাড়াও আরও বিভিন্ন কাজে বেকিং সোডার ব্যবহার রয়েছে।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ