হার্ট-বিট বা পালসরেট সম্পর্কে জেনে নিন

হার্ট-বিট বা পালসরেট সম্পর্কে জেনে নিন 

হার্ট বিট বেড়ে গেলে করনীয়


হার্ট-বিট বা পালসরেট গণনার পদ্ধতি


রােগীর হাতের কবজিতে হাতের তিন আঙুল যেমন: অনামিকা, মধ্যমা ও তর্জনি দিয়ে চাপ দিলে হৃৎস্পন্দন প্রতি মিনিটে কতবার হয় তা অনুভব করা যায়। হাতের তিন আঙুল এমনভাবে রাখতে হবে


যেন তর্জনি থাকে হৃৎপিণ্ডের দিকে, মধ্যমা মাঝখানে এবং অনামিকা হাতের আঙুলের দিকে।মধ্যমা আঙুল দিয়ে বােঝা যাবে হাতের রেডিয়াল ধমনি কত বার ধুকধুক করছে। এক মিনিটে কতােবার স্পন্দিত হচ্ছে, সেটাই হচ্ছে পালস রেট বা পালসের গতি। পালসকে আমরা সাধারণভাবে নাড়ি বলে থাকি।


কবজিতে পালস না পাওয়া গেলে কণ্ঠনালির পাশে হৃৎস্পন্দন দেখা যেতে পারে অথবা সরাসরি বুকে কান পেতেও হাট সাউন্ড শােনার চেষ্টা করা যেতে পারে। যেকোনাে সাধারণ মানুষের পালসের গতি। হার্ট বিট বেড়ে গেলে করনীয়


প্রতি মিনিটে কতবার হচ্ছে তা দেখা যায় উপরের বর্ণনা অনুসারে ব্যবস্থা নিলে। ঘড়ি ধরে পালসের

গতি দেখতে হয়। সাধারণত পালসের গতি দ্রুত হয় পরিশ্রম করলে, ঘাবড়ে গেলে, ভয় পেলে, তীব্র

যন্ত্রণা হলে কিংবা জ্বর হলে। পালসের স্বাভাবিক গতি হলাে প্রতি মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ বার। শিশুদের জন্য এটি বেশি প্রতি মিনিটে ১০০ থেকে ১৪০ বার। পূর্ণবয়স্ক মানুষের পালস রেট প্রতি মিনিটে ১০০এর অধিক হয় জ্বর ও শক্ (অচেতনতা) অথবা থাইরয়েড গ্রন্থির অতি কার্যকারিতার কারণে। ১০ ফারেনহাইট তাপ বৃদ্ধির জন্য পালসের গতি প্রতি মিনিটে ১০ বার করে বাড়ে। 


পালসের গতি খুব দ্রুত, খুব মন্থর বা অনিয়ন্ত্রিত হলে বুঝতে হবে যে হৃৎপিণ্ডের সমস্যা আছে। প্রতি মিনিটে পালসের গতি ৬০-এর কম হতে পারে হার্ট ব্লকের বা জন্ডিসের কারণে।


স্বাভাবিকভাবে মানসিক উত্তেজনা, ব্যায়াম, সন্ধ্যার দিকে পালসের গতি বেড়ে যায়। এ অবস্থায় পালসের গতি অধিক হলেও তা স্বাভাবিক ভাবতে হবে। ঘুমানাে অবস্থায় এবং রাতে সুনিদ্রার পর সকালে পালসের গতি ৬০-এর কম হতে পারে। এ অবস্থাটিকেও স্বাভাবিক ধরতে হবে। হার্ট বিট বেড়ে গেলে করনীয়


হার্ট বিট বেড়ে যায় কেন?


• সাধারণত অতিরিক্ত পরিশ্রম,  দৌড় ঝাঁপ, আবেগ, ব্যায়াম, খেলাধুলা, অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে হার্ট বিট বেড়ে যায়। কারণ এসব ক্ষেত্রে হৃদ যন্ত্র কে বেশি কাজ করতে হয়।


• জ্বর, রক্তশূন্যতা, উদ্বেগজনিত সমস্যা থাকলেও অনেক সময় হার্ট বিট বা পালস রেট বাড়তে পারে। নিকোটিন ও ক্যাফেইন গ্রহণ করলেও বেড়ে যায়। 


• ডায়রিয়া, বমি ইত্যাদির কারণে শরীরে পানির পরিমাণ করে গেলে  হার্ট বিট বা পালস রেট  বেড়ে যায়।


• ডায়াবেটিস রোগীর বা রক্তে শর্করার পরিমাণ  কমে গেলে ঘামের সঙ্গে বুক ধড়ফড় করতে থাকে, অর্থাৎ হার্ট বিট বেড়ে যায়। থাইরয়েড হরমোনের আধিক্যেও হাট বিট বা পালস রেট  বেড়ে যায়।


• হার্টের নানা জটিলতায় অস্বাভাবিক হৃৎস্পন্দন হতে পারে। যেমন হার্টের ভালভের রোগ, জন্মগত হৃদ রোগ, হার্ট ফেইলিউর,  ইত্যাদি। হৃৎস্পন্দনের সমস্যায় হার্ট বিট বেশি হতে পারে।


• কিছু ওষুধ অনেকসময়  হার্ট বিট বাড়িয়ে দেয়।। যেমন হাঁপানি রোগে ব্যবহৃত সালবিউটামল, উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ অ্যামলোডিপিন ইত্যাদি। হার্ট বিট বেড়ে গেলে করনীয়




হার্ট-বিটের তারতম্য হলে কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন? 


যদি হার্ট রেট বা পালস রেটের হার প্রতিনিয়ত ১০০ এর উপর বা ৬০ এর নিচে হলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। পালস রেটের  হারে অস্বাভাবিকতা দেখা গেলে এবং এসব উপসর্গের কোনোটা থাকলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া  উচিত- শ্বাসকষ্ট, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, মাথাঘোরানো বা চেতনা হারাতে যাচ্ছে এমন মনে হওয়া, বুক ধড়ফড়ানি এবং বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি। এছাড়া কয়েক মিনিটের চেয়ে বেশি বুক ব্যথা, শ্বাসক্রিয়ায় কাঠিন্যতা ও চেতনা হারানো হলো জরুরি উপসর্গ। এসব উপসর্গে জরুরি সেবা নিতে হবে। চিকিৎসকেরা রোগ শনাক্ত করার জন্য  ইসিজ), ইকো কার্ডিওগ্রাম, সিটিস্ক্যান, এম আর আই ও ব্লাড টেস্ট করাতে পারেন। ডায়াগনস্টিক টেস্টের ফলাফল দেখে রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হবে অথবা কার্ডিও লজিস্টের কাছে রেফার করা হতে পারে। হার্ট বিট বেড়ে গেলে করনীয়


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ