অস্টিওপােরেসিস কি? এর থেকে বাঁচার উপায় জেনে নিন
অস্টিওপােরেসিস (Osteoporesis)
অস্থির গঠন ও দৃঢ়তার জন্য ক্যালসিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। অস্থির বৃদ্ধির জন্য চাই
ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্য। অস্টিওপােরেসিস একটি ক্যালসিয়াম এর
অভাবজনিত রােগ।
বয়স্ক পুরুষ ও মহিলাদের সাধারণত এ রােগটি হয়। "হাড় ক্ষয়ের কারণ ও প্রতিকার" যেসব বয়স্ক পুরুষ বহুদিন যাবৎ স্টেরয়েডযুক্ত ঔষধ সেবন করেন তাদের ও মহিলাদের মেনােপস হওয়ার পর এ রােগ হবার সম্ভাবনা বেশি। যারা অলস জীবন যাপন করেন, কায়িক পরিশ্রম কম করেন তাদের এ রােগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া অনেকদিন ধরে আথ্রাইটিসে(আথ্রাইটিস নিয়ে এর আগে আমার একটি পোস্ট করেছি। স্ক্রল করে একটু কষ্ট করে খুঁজে দেখে নিতে পারেন।)
ভুগলে এ রােগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।অস্টিওপোরোসিস থাকা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে দুর্বল হয়ে যাওয়া হাড় এবং এছাড়া বাঁকা হাড়গুলির কারণে একটা ত্রুটিপূর্ণ অঙ্গবিন্যাস খুব দেখা যায়।
অস্টিওপােরেসিস এর কারণ
দেহে খনিজ লবণ বিশেষ করে ক্যালসিয়ামের ঘাটতির কারণে এ রােগটি হয়। মহিলাদের মেনােপস হওয়ার পর অস্থির ঘনত্ব ও পুরুত্ব কমতে থাকে।
অস্টিওপােরেসিস এর লক্ষণ
-অস্থি ভঙ্গুর হয়ে যায়
-পুরুত্ব কমতে থাকে,
-পেশির শক্তি কমতে থাকে,
- পিঠের পিছন দিকে ব্যথা অনুভব হয়,
-অস্থিতে ব্যথা অনুভব হয়।
-কুঁচকির হাড় ভেঙে গেলে রোগী আক্রান্ত পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াতে পারে না।
-আক্রান্ত পা অন্য পায়ের চেয়ে কিছুটা ছোট হয়ে যায়।
-অস্টিওপোরোসিস-এর ফলে শরীরের বিন্যাস পীড়িত হবার আশঙ্কা থাকে।"হাড় ক্ষয়ের কারণ ও প্রতিকার" ব্যক্তিটি ঝুঁকতে শুরু করে। তাছাড়া এটা কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে
যে কিছু মানুষ এ রোগের ফলে উচ্চতা হারাতে পারে।
অস্টিওপােরেসিস ঝুঁকিতে আছেন কারা?
পঞ্চাশউধর্ব ব্যাক্তি ও মেনোপজ পরবর্তী সময়ের নারীদের এই রোগ বেশি হয়। এছাড়া অত্যাধিক ধূমপান বা মদপান, কায়িক শ্রমের ঘাটতি ইত্যাদির কারণেও এই রোগ হয়ে থাকে।এছাড়া বাত জনিত রোগ, খাদ্যনালী থেকে পুষ্টি ও ভিটামিন শোষণে সমস্যা ইত্যাদি কারণেও এই রোগ হয়ে থাকে।
অস্টিওপােরেসিস রােগ নির্ণয়
অস্থির খনিজ পদার্থের ঘনত্বমাপক যন্ত্রের সাহায্যে এ রােগ নির্ণয় করা হয়। "হাড় ক্ষয়ের কারণ ও প্রতিকার" রােগের প্রাথমিক অবস্থায় তেমন কোনাে উপসর্গ দেখা দেয় না। হঠাৎ করেই সামান্য আঘাতে কোমর বা দেহের অন্যান্য কোনাে অঙ্গের হাড় ভেঙ্গে যায়।এফআরএএক্স (FRAX) নামের
অনলাইনভিত্তিক অ্যাপের সাহায্যে অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি নির্ণয় করা সম্ভব। এই অ্যাপের বাংলা ভার্সনও রয়েছে।
অস্টিওপােরেসিস রোগ প্রতিকার
পঞ্চাশাের্ধ পুরুষ ও মহিলাদের দৈনিক ১২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা,
ননীতােলা দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য গ্রহণ করা,
কমলার রস, সবুজ শাকসবজি, সয়াদ্রব্য ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া।
অস্টিওপােরেসিস প্রতিরােধের উপায়
-ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘ডি’ সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করা।
-নিয়মিত ব্যায়াম করা।
- সুষম ও আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করা।
-অস্টিওপোরোসিস হয়েছে সন্দেহ হলেই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। "হাড় ক্ষয়ের কারণ ও প্রতিকার" ডাক্তার রোগীর প্রকৃতি ও রোগের মাত্রা বুঝে প্রয়োজনীয় ওষুধ বা চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নেবেন।
-আজকাল বিসফস্ফোনেট জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা হয় ৷ এতে হাড়ের ক্ষয় হওয়া হ্রাস পায় ও ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়৷ এই ঔষুধ হাড় ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
অস্টিওপােরেসিস হাঁটুতে হলে করনীয়
-তিন চার টুকরা বরফ তোয়ালে নিয়ে হাঁটুর যেখানে ব্যাথা হচ্ছে সেখানে ১০-২০মিনিট লাগিয়ে রাখুন। এতে করে ব্যাথা প্রশম হবে।
-গরম পানির মধ্যে ১০-২০ মিনিট হাঁটু ডুবিয়ে রাখুন।"হাড় ক্ষয়ের কারণ ও প্রতিকার" সম্ভব হলে হট ওয়াটার ব্যাগ ব্যবহার করুন। ব্যাথা নিরাময়ের জন্য দিনে ২ থেকে ৩বার এই পদ্ধতিটা করুন।
-যাদের হাঁটু ব্যাথা আছে,তারা খুব কঠিন ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকুন। সহজ ব্যায়াম গুলো করার চেষ্টা করুন যাতে হাঁটুর ওপর কোন আঘাত না লাগে।আর সহজ ব্যায়াম নিয়মিত করার চেষ্টা করুন ভাল ফল পাবেন।
-আদা হাঁটুর ব্যাথা কমাতে উপযোগী তাই সকালে গরম গরম আদা দিয়ে চা খান।
0 মন্তব্যসমূহ