এ্যাজমা বা হাঁপানি রোগ থেকে বাঁচার উপায় জেনে নিন
এ্যাজমা বা হাঁপানি কিঃ
ভাইরাসজনিত কারণে অথবা বায়ুদূষণ বা ধূমপানের কারণে সর্দি কাশি হয়।
দীর্ঘদিনের সর্দি, কাশি ও হাঁচি থেকে একসময় স্থায়ীভাবে এ্যাজমা বা হাঁপানি রোগের সৃষ্টি হয়। এটি ছোঁয়াচে বা জীবাণুবাহিত রোগ নয়।
এ্যাজমা বা
হাঁপানি
রোগের কারণঃ
যে সব খাবার খেলে এলার্জি হয় (চিংড়ি, গরুর মাংস, ইলিশ মাছ ইত্যাদি), বায়ুর সাথে ধোঁয়া, ধূলাবালি, ফুলের ত্রে লক্ষ
ইত্যাদি শ্বাস গ্রহণের সময় ফুসফুসে প্রবেশ করলে হাঁপানি হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে সাধারণত সর্দি কাশি থেকে হাঁপানি হতে পারে।
ব্যতিক্রম: বছরের বিশেষ ঋতুতে বা ঋতু পরিবর্তনের সময় এ রোগ বেড়ে যায়।
এ্যাজমা বা হাঁপানি রোগের
লক্ষণঃ
- হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়।
শ্বাসকষ্টে দম বন্ধ হওয়ার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয় , ঠোট নীল হয়ে যায়, গলার শিরা ফুলে যায়।
- রোগী জোরে জোরে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করে, এসময় বুকের ভিতর সাঁই সাঁই আওয়াজ হয়।
- ফুসফুসের বায়ুথলিতে ঠিকমতো অক্সিজেন সরবরাহ হয় না বা বাধাগ্রস্ত হয়, ফলে রোগীর বেশি কষ্ট হয়।
- কাশির সাথে কখনও কখনও সাদা কফ বের হয়।
-সাধারণত জ্বর থাকে না।
- শ্বাস নেওয়ার সময় রোগীর পাজরের মাঝে চামড়া ভিতরের দিকে ঢুকে যায়।
- রোগী দুর্বল হয়ে পড়ে।
এ্যাজমা বা হাঁপানি রোগ নিরাময়ের ঘরোয়া উপায়
আদা
: আদা হাঁপানিসহ বিভিন্ন রোগের জন্য একটি সুপরিচিত প্রাকৃতিক চিকিৎসা। গবেষকদের
মতে, আদা শ্বাসনালীর প্রদাহ কমাতে এবং শ্বাসনালী সংকোচন রোধে সাহায্য করে। এক কাপ
ফুটন্ত পানির মধ্যে মেথি, আদার রস ও মধু দিয়ে অল্প কিছুক্ষণ জ্বাল দিতে হবে। রোজ
সকালে ও সন্ধ্যায় এই মিশ্রণটি পান করলে সমাধান পাওয়া যাবে। এছাড়া আপনি কাঁচা আদা
লবণ দিয়ে মিশিয়ে খেলেও উপকার পাবেন
রসুন
: রসুন হাঁপানি প্রতিরোধে প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে কাজ করে। হাঁপানির একটি
বিকল্প চিকিৎসা হিসাবে রসুন ব্যবহার করা যেতে পারে। তাই অ্যাজমা রোগীদের বেশি করে
রসুন খাওয়া উচিত
মধু : হাঁপানি
সমস্যা নিরাময়ের জন্য মধু খুবই কার্যকর।বিশেষজ্ঞদের মতে, রোজ রাতে ঘুমোতে যাওয়ার
আগে ১ চামচ মধুর সঙ্গে সামান্য দারচিনির গুঁড়া মিশিয়ে খেলে শ্বাসকষ্ট অনেক কমে
যাবে। হাঁপানি ছাড়া সর্দি-কাশি সারাতেও এই মিশ্রণ দারুণ কাজ করে।
লেবু : লেবুর
রসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। ১ গ্লাস পানির মধ্যে একটা
গোটা লেবুর রস আর সামান্য চিনি দিয়ে রোজ খেতে পারলে হাঁপানির কষ্ট অনেকটাই কমে
যাবে।
প্রতিকার:
- চিকিৎসায় এ রোগে সম্পূর্ণ নিরাময় হয় না। তবে ঔষধ সেবনে রোগী কিছুটা আরাম বোধ করে।
- যেসব খাদ্য খেলে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় সেগুলো না খাওয়া।
আলো-বাতাসপূর্ণ গৃহে বসবাস করা।
- যেসব জিনিসের সংস্পর্শ হাঁপানি বাড়ায় তা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা। যেমন- পশুর লোম, কৃত্রিম আঁশ ইত্যাদি।
-ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া ও সাবধানতা অবলম্বন করা।
- ধূমপান,গুল,সাদা পাতা, জর্দা ইত্যাদি ব্যবহার পরিহার করা।
-শ্বাসকষ্টের সময় রোগীকে তরল খাদ্য খাওয়ানো।
প্রতিরোধঃ
-স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করা।
-বায়ু দূষণ,বাসস্থান বা কর্মক্ষেত্র শ্বাসকষ্ট হতে পারে এমন সব বস্তুর সংস্পর্শ পরিহার করা।
-হাঁপানি রোগীর শ্বাসকষ্ট লাঘবের জন্য সবাময় সাথে ঔষধ রাখা ও প্রয়োজনমতো ব্যবহার করা।
0 মন্তব্যসমূহ