বয়ঃসন্ধিকাল কি? বয়ঃসন্ধিকাল পরিবর্তনের কারণ জেনে নিন
বয়ঃসন্ধিকাল
কোনাে বাড়িতে একটি শিশু জন্ম নিলে সেখানে আনন্দের সাড়া পড়ে যায়। সকলেই শিশুটিকে আদর করতে চায়, কোলে নিতে চায়। শিশুটি ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে, পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত থাকে তাদের শৈশবকাল। ছয় থেকে দশ বছর পর্যন্ত বয়সকে আমরা বাল্যকাল বলি, তখন একজন শিশুকে মেয়ে হলে বালিকা এবং ছেলে হলে বালক বলা হয়। দশ বছর বয়সের পর একটি মেয়েকে কিশােরী এবংএকটি ছেলেকে কিশাের বলা হয়। মানুষের জীবনের এই সময়কে বয়ঃসন্ধিকাল বলে। দশ বছর থেকে উনিশ বছর বয়স পর্যন্ত কিশােরকালের বিস্তৃতি। অর্থাৎ বয়ঃসন্ধিকাল বাল্যাবস্থা ও যৌবনকালের মধ্যবর্তী সময়। এ সময়কালে বালক ও বালিকার শরীর যথাক্রমে পুরুষের এবং নারীর শরীরে পরিণত
হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। সাধারণত মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল ছেলেদের চেয়ে একটু আগে শুরু হয়। মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল শুরু হয় আট থেকে তেরাে বছর বয়সের মধ্যে। ছেলেদের বয়ঃসন্ধিকাল শুরুর বয়স দশ থেকে পনেরাে বছর। কারাে কারাে ক্ষেত্রে এর চেয়ে একটু আগে বা পরেও বয়ঃসন্ধিকাল শুরু হতে পারে। বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যা ও সমাধান
বয়ঃসন্ধিকাল পরিবর্তনের কারণ
সাধারণত ছেলেমেয়েদের ১১-১৯ বছরের সময়কালকে বয়ঃসন্ধিকাল বলে। এ সময়ে ছেলেমেয়েদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়। তবে আবহাওয়া, স্থান, খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ ও মানের তারতম্যের কারণে এক একজনের বয়ঃসন্ধিকালের সময়টা এক এক রকম হতে পারে। বয়ঃসন্ধিকালে যেসব পরিবর্তন ঘটে, তার জন্য দায়ী হরমােন নামক একটি রাসায়নিক পদার্থ, যা অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয়। হরমােন শরীরের ভিতরে স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হয়। ছেলে ও মেয়েদের শরীরের হরমােন ভিন্ন। এ কারণে তাদের শরীর ও মনে যে পরিবর্তন হয় সেটিও ভিন্ন। মেয়েদের শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তনের জন্য দায়ী প্রধানত দুটি হরমােন। বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যা ও সমাধান
এ হরমােন দুটোর নাম হলাে ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন।
এসৰ হরমােনের প্রভাবে কণ্ঠরের পরিবর্তন হয়, দুত দৈহিক বৃদ্ধি হয় এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ,
প্রত্যঙ্গের আকার বৃদ্ধিসহ অন্যান্য পরিবর্তন ঘটে। এ হরমােনের কারণে মেয়েদের ঋতুস্ৰাৰ ৰা মাসিক শুরু হয়। বয়স যখন ১০-১৭ বছর হয়, সাধারণত তখনই মেয়েদের ঋতুস্রাব শুরু হয়।
নারীর সন্তান ধারণের সক্ষমতার লক্ষণ হলো নিয়মিত ঋতুস্ৰাৰ। ঋতুস্রাব শুরু হওয়া সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ। বাংলাদেশের নারীদের সাধারণত ৪৫-৫৫ বছর বয়সের মধ্যে ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায়। ২৮ দিন পরপর বা মাসে একবার এই ঋতুস্ৰাৰ প্ৰক্ৰিয়া চলে এবং সাধারণত এটি ৩-৭ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেদের শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তনের জন্য যে হরমোন দায়ী, তার নাম হলাে টেস্টোস্টেরন।
এ হরমােনের প্রভাবে তাদের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন ঘটে। ছেলেদের গলায় স্বর ভারী হয়।
মুখে দাড়ি ও গোঁফ গজায় দ্রুত দৈহিক বৃদ্ধি পায়। ১৩ থেকে ১৫ বছরের ছেলেদের শরীরে
শুক্রাণু তৈরি হয় এবং মাঝে মাঝে রাতের বেলা ঘুমের মধ্যে বীর্যপাত ঘটে। ছেলে ও মেয়ে উভয়ের
মাঝেই শারীরিক পরিবর্তনের পাশাপাশি মানসিক পরিবর্তন হয়। ছেলে ও মেয়েরা এ বয়সে কল্পনাপ্রবণ হয় এবং আবেগ দ্বারা চালিত হয়। তারা পরিপাটি রূপে নিজেকে সাজিয়ে রাখতে চায়। এ সময় ছেলেরা মেয়েদের প্রতি এবং মেয়েরা ছেলেদের প্রতি আকর্ষণবােধ করে। এভাবেই ধীরে ধীরে কিশাের-কিশােরীরা প্রাপ্তবয়স্ক মানুষে পরিণত হতে শুরু করে। বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যা ও সমাধান
আশা করি আমাদের এই লেখাগুলো আপনার ভাল লেগেছে। যদি এই লেখা গুলো আপনার ভাল লাগে তবে আপনার পরিবার ও বন্ধু, বান্ধবের সাথে শেয়ার করুন। নিজে সুস্থ থাকুন ও অন্যদেরও সুস্থ থাকতে সহয়তা করুন। আপনি কোন সমস্যা ই ভুগে থাকলে তবে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে আমরা সেই বিষয়ে লেখার চেষ্টা করব। বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যা ও সমাধান
0 মন্তব্যসমূহ