দাদ রোগ কি? দাদ রোগ থেকে বাঁচার উপায় জেনে নিন
দাদ চামড়ার একটি সাধারণ সংক্রমণ যা শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের মধ্যেই দেখা যায়। এটি একটি ছত্রাকজনিত রোগ।
দাদের চেহারা হল একটি গোলাকার পরিষ্কার জায়গা যাকে ঘিরে আছে রিং এর মত ফুসকুড়ি। রিং'এর বাইরের দিকটা উঁচু, লাল রঙের এবং খসখসে। দাদে তীব্র চুলকানি হয়। ইংরাজিতে দাদকে রিং-ওয়ার্ম বলা হয়।
এটি একটি জটিল ছোঁয়াচে রোগ।
এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য কিছু উপায় অবলম্বন করতে হয়।
এমন অনেকে আছে যে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়েও এর থেকে পরিত্রাণ পাচ্ছে না। কিছু নিয়ম মেনে চললে এর থেকে আরোগ্য লাভ করা যায়।
সংক্রমণ :
সাধারণত ঘামে ভেজা শরীর, অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন শরীর, দীর্ঘ সময় ভেজা থাকে এমন শরীর, ত্বকে ক্ষত
স্থল আছে এমন শরীর সহজে এই ছত্রাকের স্পোর (বা হাইফা) দ্বারা আক্রান্ত হয়। এই রোগে জীবাণুর সুপ্তিকাল ৩৭
দিন। সাধারণত আক্রান্ত হওয়ার ৩-৫ দিন পর রোগে লক্ষণ প্রকাশ পায়। দেহের যে কোনো অংশেই দাদরোগ হতে পারে,
তবে মুখমণ্ডল এবং হাতে অধিক দেখা যায়। উরু, মাথার খুলি, নখ ইত্যাদিও আক্রান্ত হয়। মাথার খুলির দাদরে।
অপেক্ষাকৃত মারাত্মক। আক্রান্ত স্থানের নামানুসারে ডাক্তারি পরিভাষায় দাদরোগটি ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত হয়।
লক্ষণ:
দাদ হলে সাধারণত চামড়ার ওপর গোলাকার ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এটি দেখতে অনেকটা চাকার মতো যার কিনারগুলো সামান্য উঁচু হয়। যতই দিন যায় চাকার পরিধি বাড়তে থাকে আর কেন্দ্রের দিকে বা ভেতরের দিকে ভালো হয়ে যেতে থাকে। ক্ষত স্থান থেকে খুসকির ন্যায় ওঠে। কখনো কখনো পানি ভর্তি দানা ও পুঁজ ভর্তি দানা হয়। ক্ষত স্থান অত্যন্ত চুলকায়৷ মাথায় দাদ হলে আক্রান্ত স্থানের চুল পড়ে যায়। কোমরে বা কুচকিতে হলে চামড়া সাদা ও পুরু হয়ে যায়। নখে হলে নখ অস্বচ্ছ ও ভঙ্গুর হয়ে যায়। দাদ চুলকালে সেখান থেকে কষ পড়তে থাকে।
দাদ রোগ থেকে পরিত্রাণের কিছু উপায়👉
১. আক্রান্ত স্থানে সাবান বা শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না।
তবে ছত্রাকপ্রতিরোধী সাবান ব্যবহার করতে পারবেন।
২.নিয়মিত গরম পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থান ভালভাবে ধুয়ে নিন।
৩.আক্রান্ত স্থানে হাতের নখ দিয়ে বেশি চুলকানো যাবে না। যদি আপনি হাতের নখ দিয়ে চুলকান তবে ঐ হাত আপনি আপনার শরীরের কোন অংশে স্পর্শ করলে ঐ স্থানেও দাদ রোগ হতে পারে। তাই যতসম্ভব নখ দিয়ে চুলাকনো থেকে বিরত থাকুন।
৪. আক্রান্ত স্থানে যেন বেশি সময় ধরে যেন ঘেমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত।
৫.নিয়মিত গোসল করুন ও পরিষ্কার থাকুন।
৬.সুতি এবং ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে। পানি কম ধরতে হবে। শরীরে যেন আলো বাতাস লাগে এভাবে চলতে হবে। ঠান্ডায় থাকতে হবে। তাহলেই এগুলো কম হবে।
৭.আক্রান্ত স্থানে নিম পাতার রস ব্যবহার করতে পারেন।
নিম পাতা একটি কার্যকারী ঔষধ।
৮.রসুন কেটে ছোট ছোট করে কেটে ব্যান্ডেজ দিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে দিন।
রাতে ঘুমানোর আগে এটা করুন। দেখবেন আস্তে আস্তে ফল পাবেন।
৯.একটি মলম ব্যবহার করতে পারেন। খুবই কার্যকারী এটি। এটির নাম গ্যাকোজিমা। যেকোন ফার্মেসীতে গেলে পাওয়া যাবে। দাম ২৫-৪০ টাকা। এটি আক্রান্ত স্থানে হালকা করে লাগিয়ে দিন। মনে রাখবেন যেন আক্রান্ত স্থানের বাইরে না লাগে। এটি যেখানে লাগাবেন সেখানে কাল হয়ে যাবে। তাই আক্রান্ত স্থানের বাইরে লাগাবেন না। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে লাগিয়ে নিন। এটি কিছুদিন ব্যবহার করে দেখুন৷ ভাল কাজ করবে।
১০.এতেও যদি কাজ না হয় তবে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
0 মন্তব্যসমূহ