কেমোথেরাপি কি? এর ব্যবহার ও পাশ্ব প্রতিক্রিয়া কি জেনে নিন।
কেমােথেরাপি
ক্যান্সারে শরীরের কিছু কোষ বিভাজনের গতি
অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। কেমােথেরাপি হলাে
এমন এক ধরনের চিকিৎসা, যেখানে বিশেষ
ধরনের রাসায়নিক ঔষধ ব্যবহার করে শরীরের জন্য ক্ষতিকর দ্রুত বিভাজনরত ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা হয়। এটি ক্যান্সার চিকিৎসায় একটি বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি। ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়
কার্যপ্রণালি :
প্রতিটি জীবদেহ কোষ দ্বারা গঠিত। এই কোষ বৃদ্ধি পায় বা বিভাজিত হয়। জীবদেহের
এই কোষ বিভাজনের ওপর ভিত্তি করে কেমােথেরাপি গঠিত হয়েছে। কেমােথেরাপিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক ঔষধ কোষ বিভাজনের নির্দিষ্ট ধাপে প্রয়ােগ করা হয়। কোষ বিভাজনের কোন ধাপে কী প্রয়ােগ করা হবে তার ওপর নির্ভর করে রাসায়নিক ঔষধগুলাে ঠিক করা হয়। এটি একটি নির্দিষ্ট সময় জুড়ে থাকে।
যেমন: প্রতিদিনে ১ বার, সপ্তাহে ১ বার বা মাসে ১ বার প্রভৃতি। সাধারণত এভাবে প্রায় ৬ বার ঔষধ
প্রয়ােগ করা হয়। ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়
কেমোথেরাপি কখন দেয়া হয়?
কেমোথেরাপির ঔষধ রক্তের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করানো হয়। এটি তখন পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে যায়।
এর ফলে ক্যান্সারের সেল যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই ধ্বংস হয়ে যাবে।
কেমোথেরাপি তখনই দেয়া হয় থাকে,যখনি ডাক্তার রা মনে করে যে, ক্যান্সারের সেল শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আছে।
ক্যান্সার যদি শনাক্ত করা না যায়, তখন এর কিছু সেল মূল টিউমার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আশেপাশের অংশে আক্র মণ করে থাকে।
অনেক সময় ক্যান্সারের সেল অনেক দূর পর্যন্ত যায়। যেমন লিভার কিংবা ফুসফুসে গিয়েও ছড়াতে থাকে।
একজন চিকিৎসক অস্ত্রো পচারের মাধ্যমে ক্যান্সার টিউমারের এবং তার আশপাশের টিস্যু কেটে ফেলতে পারেন।
ক্যান্সার আক্রান্ত অংশ ফেলে দেবার পরও সেখানে যদি আরো ক্ষতিকারক ক্যান্সারের কোষের উপস্থিত থেকে থাকে তখন কেমোথেরাপি দেয়া হয়।
কিছু কিছু ক্যান্সার, যেমন লিউকোমিয়ার চিকিৎসার জন্য কেমোথেরাপি দেয়া হয়ে থাকে।
কারণ লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হলে সেটি পুরো শরীরে ছড়িয়ে যায়।
টিউমারের আকার ছোট হয়ে আসলে চিকিৎসকের জন্য সেটি অস্ত্রো পচারের মাধ্যমে ফেলে দেয়া সহজ হয়।
অনেক সময় ক্যান্সার থেকে বাঁচার উপায় না থাকলেও কেমোথেরাপি দেয়া হয়। এর মাধ্যমে রোগীর শরীরে কিছুটা ভালোভাবে তৈরি হয়। ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়
কীভাবে কেমোথেরাপি দেয়া হয়?
সাধারণত ইনজেকশনের মাধ্যমে কেমোথেরাপি শিরায় প্রবেশ করানো হয়ে থাকে।
অনেক সময় স্যালাইন যেভাবে দেয়া হয়, কেমোথেরাপিও টিক সেভাবে দেয়া হয়ে থাকে। এতে করে ঔষধলুধ কিছুটা পাতলা হয়ে আসে।
কোন রোগীকে যদি অন্য ঔষুধ ও খেতে হয় তখন তার শিরায় একটি ইনজেকশনের টিউব রেখে দেয়া হয়। যাতে করে বিভিন্ন ধরনের ঔষধের জন্য বারবার সেটি খুলতে এবং লাগাতে না হয়। এতে করে রোগীর অস্বস্তি বোধ কম হতে পারে। ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়
কেমােথেরাপির ঝুঁকি বা পার্শ্বক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া:
কেমােথেরাপির বিশেষ ঔষধ ক্যান্সার আক্রান্ত কোষ ছাড়াও সংশ্লিষ্ট অন্য কোষও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
এতে নিম্নোক্ত ঝুঁকি থাকতে পারে:
১. চুল পড়ে যাওয়া।
২. হাতের তালু, পায়ের তালু প্রভৃতি অঙ্গের চামড়া পুড়ে যাওয়া।
৩. হজমে সমস্যা হওয়া এবং এর কারণে ডায়ারিয়া, পানিশূন্যতা, বমি প্রভৃতি সমস্যা হওয়া।
৪. লােহিত রক্ত কণিকা, শ্বেরক্ত কণিকা ও অণুচক্রিকা উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হওয়া।
কেমােথেরাপির ঝুঁকি এড়াবার কিছু কৌশলঃ
১. শরীরের তাপমাত্রার দিকে লক্ষ রাখা।
২. তরল বা নরম খাবার খাওয়া।
৩. কেমােথেরাপি গ্রহণকৃত রােগীর বর্জ্য, যেমন মলমূত্র, বমি ইত্যাদি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে জীবাণুনাশক নিয়ে পরিষ্কার করে ফেলা।
৪.বর্জ্য পরিষ্কার করার সময় খালি হাত ব্যবহার না করে গ্লাভস বা কমপক্ষে প্লাস্টিকের ব্যাগে হাত
ভালভাবে মুড়িয়ে পরিষ্কার করা।
৫. শরীরের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন ঠিক রাখার জন্য সার্বক্ষণিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে।
চলা ও যােগাযােগ রাখা। ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়
0 মন্তব্যসমূহ