আইভিএফ বা কৃত্রিম গর্ভধারন পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নিন

আইভিএফ বা কৃত্রিম গর্ভধারন পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নিন।



আইভিএফ বা কৃত্রিম গর্ভধারন


আইভিএফ পদ্ধৃতি ছাড়া আর কোনও উপায়ে গর্ভধারণ সম্ভব নয় নিশ্চিত হলে যে কোনাে দম্পতি প্রশিক্ষিত ও আধুনিক হাসপাৰ্তাল বা ক্লিনিকে গিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে পারেন। সব চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রায় একই ধরনের চিকিৎসা

সম্পন্ন হয়ে থাকে। নিচে এ ধাপগুলাে সম্বন্ধে সংক্ষেপে সাধারণ ধারণা দেওয়া হলাে । "আইভিএফ খরচ ভারত"


ধাপ-১ঃ 


স্বাভাবিক রজঃচক্র দমনঃ


IVF-এর প্রথম ধাপে স্ত্রীর স্বাভাবিক রজঃচক্র দমিয়ে রাখতে একটি ওষুধ

প্রয়ােগ করা হয়। ওষুধটি ইনজেকশন হিসেবে কিংবা নাকের ভেতর স্প্রে করে দেওয়া হয় ।


ধাপ-২:


ডিম্বাণুর সরবরাহ বৃদ্ধি : 


নারীদেহে সাধারণত প্রতিমাসে একটি করে ডিম্বাণু পরিণত (mature) হয় । কিন্তু কৃত্রিম গর্ভধারণের ক্ষেত্রে একাধিক ডিম্বাণুর প্রয়ােজন হয় কারণ একটিমাত্র ডিম্বাণু নিয়ে পূর্ণ-চিকিৎসা সম্পন্ন করার ঝুঁকি

নেওয়া ঠিক নয়। এ কারণে ডিম্বাণুর উৎপাদন বাড়াতে FSH (Follicle Stimulating Hormone) নামে হরমােনযুক্ত ইনজেকশন প্রয়ােগ করা হয়। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে বেশি ডিম্বাণু উৎপাদিত হলে বেশি ডিম্বাণু নিষিক্ত করে যাচাই-বাছাইয়ে

সুবিধা হবে। এভাবে ডিম্বাশয়কে বেশি ডিম্বাণু উৎপাদনে উদ্দীপ্ত করা হয়। "আইভিএফ খরচ ভারত"



ধাপ-৩ঃ


অগ্রগতি পরীক্ষা :


 ডিম্বাণু উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য দ্বিতীয় ধাপে প্রয়ােগিত হরমােনের ফলাফল পরীক্ষা করা

হয় ততীয় ধাপে। এ জন্য আন্ট্রাসাউন্ড স্ক্যান (বা ছবি) ও হরমােনের মাত্রা যাচাইয়ের জন্য রক্ত ও মূত্র পরীক্ষা করা হয়।


ধাপ-৪. ডিম্বাণু সংগ্রহ : ডিম্বাণু সংগ্রহের ৩৪-৩৮ ঘন্টা আগে ডিম্বাণু পরিপক্কতায় সাহায্য করতে আরেকবার হরমােন ইনজেকশন দেওয়া হয়। ডিম্বাণু চোষক (follicular aspiration) প্রক্রিয়ায় নারীদেহের ডিম্বাশয় থেকে বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে পরিপক্ক ডিম্বাণু সংগ্রহ করা হয়। এর আগে অবশ্য ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ানাে হয়। আন্ট্রাসাউন্ড ছবির সূত্র ধরে যােনি পথে একটি সূক্ষ্ম ফাঁপা সূচ প্রবেশ করিয়ে ডিম্বাশয় ও ফলিকলে (ডিম্বথলিতে) আবৃত ডিম্বাণুর কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। উঁচটি চোষক যন্ত্রের সঙ্গে লাগানাে থাকে। এ যন্ত্র ডিম্বাশয়ের ফলিকল থেকে সামান্য তরলসহ ডিম্বাণু সংগ্রহ করে। এভাবে একটি একটি করে সুস্থ ও পরিপক্ক ডিম্বাণু সংগৃহীত হয়। একটি ডিম্বাণু সংগ্রহের পর সেটি নির্ধারিত পাত্রে রেখে

আবার আরেকটি ডিম্বাণু সংগ্রহ করা হয়। প্রত্যেক ডিম্বাশয় থেকে পর্যাপ্ত পরিপক্ক ডিম্বাণু সংগ্রহের পর নিষেকের পূর্ব পর্যন্ত পরিবেশবান্ধব নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রায় (নারীদেহের সমান তাপমাত্রায়) সংরক্ষিত থাকে। "আইভিএফ খরচ বাংলাদেশ"


ধাপ-৫ঃ


শুক্রাণু সংগ্রহ : 


নারীর ডিম্বাণু সংগ্রহের সময়কালে পুরুষ সঙ্গীকে শুক্রাণু দানের জন্য আহ্বান জানানাে হয়।

শুক্রাণু সংগ্রহের পর কিছু সময়ের জন্য কালচার মিডিয়ামে জমা রাখা হয়। এর পর তা বিশেষ প্রক্রিয়ায় বীর্যরস পরিস্কার করে দ্রুতগতিতে ঘূর্ণনের মাধ্যমে সুস্থ ও সক্রিয় শুক্রাণু নির্বাচন করা হয় ।


ধাপ-৬ঃ


ডিম্বাণু নিষিক্তকরণ : 


গবেষণাগারে ইনকুবেটরে রাখা সর্বোচ্চ গুণগত মানের শুক্রাণু ও ডিম্বাণুকে নিষেকের জন্য একসঙ্গে ১৬-২০ ঘন্টা পেট্রিডিশ বা কাঁচের টিউবে রেখে দেওয়া হয়। প্রত্যেক ডিম্বাণুর জন্য প্রায় একলক্ষ শুক্রাণুর ব্যবস্থা রাখা হয়। এরপর পরীক্ষা করে দেখা হয় কোনাে ডিম্বাণু নিষিক্ত হয়েছে কিনা। নির্ধারিত সময় পর যদি নিষেক

না ঘটে থাকে তখন বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে একটি ডিম্বাণুর ভেতরে একটি শুক্রাণুর প্রবেশ ঘটিয়ে নিষেকের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এ প্রক্রিয়ার নাম অন্তঃসাইটোপ্লাজমিক শুক্রাণু ইনজেকশন  নিষেক ঘটেছে এবং ক্লিভেজ (বিভাজন) শুরু হয়েছে এমন অবস্থা দেখা দিলেই নিষিক্ত ডিম্বাণুকে ভ্রূণ হিসেবে অভিহিত করা হয়।"আইভিএফ খরচ বাংলাদেশ"


ধাপ-৭ঃ


ভূণ স্থানান্তর : 


নিষিক্ত ডিম্বাণু সংগ্রহের পর ১-৬ দিনের মধ্যে (সাধারণত ২ - ৩ দিনের মধ্যে) নারীর

জরায়ুতে স্থানান্তর করা হয়। এ সময়ের ভেতর নিষিক্ত ডিম্বাণু ২-৪ ব্লাস্টোমিয়ার বিশিষ্ট ভুণে রূপ নেয়। একটি সুস্থ, সক্রিয় বিভাজনশীল ভূণকে ক্যাথেটারের সাহায্যে আন্ট্রাসাউন্ড প্রতিচ্ছবি দেখে গর্ভাশয়ে সাবধানে স্থাপন করা হয়। এটি

একটি ব্যথাহীন প্রক্রিয়া, তবে কেউ পেশিতে সামান্য খিল ধরায় আক্রান্ত হতে পারে। ভ্রণ যদি জরায়ু অর্থাৎ গর্ভাশয়ে সংস্থাপিত হয় তাহলে গর্ভসঞ্চার হয়েছে বলে মনে করা হয়। এরপর ১০ মিনিট থেকে ৪ ঘন্টার মধ্যে গর্ভবতী বাসায়।

চলে যেতে পারেন। কেউ একাধিক ভ্রণ গর্ভাশয়ে সংস্থাপন করতে পারেন। সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্যগত অবস্থা, বয়স প্রভৃতি বিশেষ বিবেচনায় নিতে হয়। অনেকে একটি ভূণ সংস্থাপিত হওয়ার পর বাকি ভূণগুলােকে গবেষণাগারে ভবিষ্যতে সংস্থাপনের জন্য, কেউবা অন্য কাউকে দান করার জন্য গবেষণাগারের বিশেষ প্রক্রিয়ায় জমা রাখেন।

সংস্থাপনের পরবর্তী সময়কালটি সুনির্দিষ্ট নজরদারির মধ্যে থাকতে হয়। কারণ IVF পদ্ধতিতে জীবিত সন্তান জন্মদানের হার খুব বেশি নয়।"আই ভি এফ পদ্ধতি কি"

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ