যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে নিন

যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে নিন 


যক্ষ্মা (Tuberculosis) :


যক্ষ্ম একটি পরিচিত বায়বাহিত সংক্রামক রােগ। যেকোনাে লােক, যেকোনাে সময়ে এ রােগ দ্বারা সংক্রমিত যারা অধিক পরিশ্রম করে, দুর্বল, স্যাঁতসেঁতে বা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করে, অপুষ্টিতে ভােগে অথবা যক্ষ্মা সাথে বসবাস করে তারা এ রােগে সহজে আক্রান্ত হয়। আমাদের অনেকের ধারণা যক্ষ্মা শুধুমাত্র ফসফুসে রোগ। আসলে ধারণাটা একেবারেই সঠিক নয়। যক্ষ্মা দেহের যেকোনাে স্থানে হতে পারে। যেমন- অন্ত্র , হাড় ফল ইত্যাদি। দেহে এ রােগের আক্রমণ ঘটলে সহজে এর লক্ষণ প্রকাশ পায় না। যখন জীবাণুগুলাে দেহের রােগ প্রতিবে শ্বেত রক্তকণিকাকে পরাস্ত করে দেহকে দুর্বল করে তখনই এ রােগের লক্ষণ প্রকাশ পায়।

চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে এটি জীবাণুঘটিত মারাত্মক সংক্রামক রোগ, যা মাইকো-ব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস নামক জীবাণু দিয়ে হাঁচি-কাশির মাধ্যমে সংক্রমণ ঘটিয়ে থাকে। একনাগাড়ে তিন সপ্তাহের বেশি কাশি, জ্বর ও বুকে ব্যথা এ রোগটির প্রধান লক্ষণ। কফ পরীক্ষা করাই হচ্ছে এ রোগ নির্ণয়ের একমাত্র নির্ভরযোগ্য উপায়।


যক্ষ্মা রোগের কারণ :


Micobacterium tuberculosis নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে এ রােগ হয়। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করলে অতি সহজে দেহে রােগ জীবাণুর বিস্তার ঘটে। 


যক্ষ্মা রােগ নির্ণয় : 


চামড়ার পরীক্ষা ও এক্সরের সাহায্যে এ রােগ নির্ণয় করা যায়।


যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ :


- রােগীর ওজন কমতে থাকে, আস্তে আস্তে শরীর দুর্বল হতে থাকে। 

- সাধারণত তিন সপ্তাহের বেশি সময় কাশি থাকে।

-খুসখুসে কাশি হয় এবং কখনও কখনও কাশির সাথে রক্ত যায়।

- রাতে ঘাম হয়, বিকেলের দিকে জ্বর আসে। দেহের তাপমাত্রা খুব বেশি বাড়ে না।

-বুকে পিঠে ব্যথা হয়।

- অজীর্ণ ও পেটের পীড়া দেখা দেয়।।


যক্ষ্মা রোগের প্রতিকার:


- ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করা।

-এ রােগের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদী। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রােগ নিবারণের নিয়মগুলাে কঠিনভাবে মেনে চলা। 

- রােগীকে হাসপাতালে বা স্যানাটোরিয়ামে পাঠানাে অধিক নিরাপদ।

- রােগীর ব্যবহারের সবকিছু পৃথক রাখা উচিত।

- রােগীর কফ বা থুথু মাটিতে পুঁতে ফেলতে হয়।

- রােগীর জন্য উপযুক্ত চিকিৎসা ও পরিমিত পুষ্টিকর খাদ্যের ব্যবস্থা রাখা।

-ডাক্তারের নির্দেশ ব্যতীত কোনাে অবস্থায় ঔষধ সেবন বন্ধ করা উচিত নয়। 


যক্ষ্মা রোগ প্রতিরােধ করার উপায়:


- এ মারাত্মক রােগের আক্রমণ থেকে রেহাই পেতে হলে শিশুদের যক্ষ্মা প্রতিষেধক বি.সি.জি টিকা দিতে হবে। শিশুর জন্মের পর থেকে এক বছর বয়সের মধ্যে এ টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা।

-বর্তমানে দেশের বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্রে এ টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।


যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসার খরচ কেমন জেনে নিন


২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে ২৪ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে কর্মকর্তারা এর জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের সফলতার কথা বলছেন।


অন্য যক্ষ্মারোগীসহ শিশু যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে দেশে।


তবে ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা বা মাল্টি ড্রাগ রেজিসটেন্ট টিউবারকিউলোসিস (এমডিআর) রোগীদের আনুমানিক ৮০ শতাংশই শনাক্তের বাইরে থাকছে। আর সব ধরনের যক্ষ্মা চিকিৎসার আওতাবহির্ভূত থাকছে ২৬ শতাংশ রোগী।


অথচ যক্ষ্মার প্রচারে সবসময় বলা হয় এ রোগের চিকিৎসা সম্পূর্ণ ফ্রি।


তবে চিকিৎসক ও কর্মকর্তারা বলছেন ফ্রি বলতে এখানে শুধু ঔষধ ও কাশির পরীক্ষাকে বোঝানো হয়েছে।


অর্থাৎ এর বাইরে যেমন এক্সরে, সিটি স্ক্যান বা যক্ষ্মা সম্পর্কিত অন্য পরীক্ষা নিরীক্ষা বা চিকিৎসা কিছুই বিনামূল্যে হয়না, এমনকি বক্ষব্যাধি হাসপাতালেও সব বেড ফ্রি নেই।


যক্ষ্মা একটি মারাত্মক রোগ। তাই এই রোগ সম্পর্কে সবাইকে সচেতন হওয়া উচিত। প্রতিটি এলাকায় যক্ষ্মা রোগের ক্ষতিকর দিক ও যক্ষ্মা রোগ থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে আলোচনা সভার আয়োজন কর উচিত।


যদি আমাদের এই লেখাগুলো আপনার ভাল লাগে তাহলে আপনার পরিবার,পরিজন ও

বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। তাদেরকে এই রোগের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে অবহিত করুন। নিজে সুস্থ থাকুন অন্যদের ও সুস্থ থাকতে সহয়তা করুন। আপনি যে রোগে বা যে সমস্যাই ভুগছেন কমেন্ট করে আপনার মূল্যবান মন্তব্যটা আমাদের জানান। আমরা সে বিষয়ে লেখার চেষ্টা করব। আপনার সুস্থতা কামনা করি।





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ